অপ্রয়োজনের আলাপচারিতা: পর্ব ১
মিষ্টভাষী, স্পষ্টভাষী কারে যে আমি প্রিয় বলি
প্রিয় আমি যাকে খুশি বলি, জানি তাতে প্রিয় ও অপ্রিয় কোনো মাখলুকাতেরই কিছু যাবে-আসবে না; যাওয়া-আসার প্রশ্নও কোনোকালে ছিল না। তবে আপদ ছিল, আছে, থাকবে।
পছন্দ আপেক্ষিক। x-এর সাপেক্ষে y-এর মানের মতো। জীবনের সব পর্যায়ে পছন্দ এক ও অভিন্ন থাকবে- এমন ভাবাও অবান্তর। তবে জরুরি হলো সমস্ত পছন্দের ন্যূনতম যৌক্তিকতা। মিষ্টভাষী হওয়ার জন্য কয়েক হাজার সুকারণ আছে। এবং মনে রাখা জরুরি এগুলো ন্যুনতম নয় বরং সর্বোচ্চই। অন্যদিকে স্পষ্টভাষী- পৃথিবীতে মিষ্টভাষী হওয়ার যতসব কারণ রয়েছে তার থেকে অন্তত একটা কারণ কম হবে স্পষ্টভাষী হওয়ার। তবে এর কারণগুলোও মোটেও দুর্বল নয় বরং খানিকটা রাজকীয় ধাচেরই।
উপরে এই যে পরিসংখ্যানটা দিলাম- কী মনে হয়? এটা কোনো পরিসংখ্যান ব্যুরো বা বুড়ির? না জনাব, এ পরিসংখ্যান আমাকে কেউ এনে দেয়নি, হাজারটা লোককে কয়েকটা করে প্রশ্ন করে দ্বৈবচয়ন পদ্ধতিতে আমি নিজেও এ পরিসংখ্যান করিনি। এ হলো মিষ্টভাষী বনাম স্পষ্টভাষীর একটা কাল্পনিক পছন্দের তর্কাবস্থা বাস্তবায়নের প্রায়গাণিতিক উপমামাত্র।
প্রশ্ন থেকেই যায়- আরে ভাই, ভুলভাল তথ্য দেওয়ার দরকারটা কী? আরে ভাই এতো ভুল তথ্যও দেয়া হয়নি। একটু ভেবে দেখেন- মিষ্টভাষী হওয়াটা মানুষের জন্য একটা ইতিবাচক গুন, ঠিক? এবার এই গুনের পেছনে হাজারটা যুক্তি দাঁড় করিয়ে দেওয়া কি খুবই কঠিন কাজ? না, না..একেবারেই কঠিন না। টুকটাক চেষ্টাচুষ্টি করলে হয়েই যাবে মনে হয়। এখন দ্বিতীয় ধাপে সমস্যা হলো স্পষ্টভাষীর দলে একটা কারণ কম কেন? সহজ- কারণ স্পষ্টভাষী হলে মানুষ আপনাকে মিষ্টভাষীর চেয়ে কম পছন্দ করবে।
ব্যাস, তাহলে তো হয়েই গেল। মিষ্টভাষীকে প্রিয় বলবো। কিন্তু আমি বলি না। পছন্দ হয় না মিষ্টভাষী লোকগুলোকে সবসময়। বেশিরভাগ মিষ্টভাষী লোকগুলো থেকেই কেমন জানি একটা ভেজাল ভেজাল গন্ধ পাওয়া যায়। এটা আমারই দুর্বলতা, আমি জানি। আামর কাছের ও দুরের মানুষেরা এটা খুব ভাল করে জানেন, যে আমি নিজে কতটা মিষ্টভাষী। একদমই না।
'সত্য সুন্দর'- এ শব্দদুটো পরপর এতবেশি পরিচিত যে, বাংলা পড়তে জানে এমন যে-কেউ শব্দদুটি পাশাপাশি দেখলে উচ্চারণ একটু বদলে সুর করে গেয়েই ফেলবে। বহুদিন ধরে নোবেলজয়ী বিশ্বকবির এই উপলব্ধিটা আমার কাছে কেমন কেমন লাগে। একজীবনেই কী ভয়ংকর ভয়ংকর সব সত্যের মুখোমুখি হতে হয় এক-একটা মানুষকে! ওই ভয়ংকর সত্যগুলোকে আমার কোনোদিনই সুন্দর মনে হয়নি। সত্যের ভিত্তি এখানে বিবেচনায় নেইনি, সত্যকে সত্য হিসেবেই ধরে নিয়েছি।
সত্য অসুন্দর, এটা একেবারেই বলছি না। চারিত্রিক গুনাবলী নিয়ে চিন্তাটিন্তা করতে গেলে হয়তো দেখা যাবে সত্যই সবচাইতে জরুরি এলিমেন্ট। ব্যক্তি থেকে সমষ্টি, তারপর অনন্ত পর্যন্ত হলেও হতে পারে সত্যের বিস্তৃতি।
সেসব একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা আর মিষ্টভাষী বনাম স্পষ্টভাষীর মতো জরুরি তো নয়ই। কথা হলো মিষ্টভাষীকে সত্য থেকে আলাদা করে অসুন্দর করে উপস্থাপন করার অপচেষ্টা কেন করলাম?
কারণ, মিষ্টভাষী মানুষেরা মানুষকে বহুদিন পর্যন্ত কষ্ট দেয় না। অন্তত যতদিন তাদের ধৈর্যে কুলায়। আর মনে হয়, ভাষার মিষ্টতা এবং ধৈর্যের মধ্যে একটা সম্পর্ক আছেই। তা না হলে মিষ্টভাষীরা এতো এতো ধৈর্য কোথায় পায়?
মিষ্টভাষীরা মানুষকে বহুদিন কষ্ট দেয় না, মিষ্টি করে করে কথা বলে। অন্যদিকে স্পষ্টভাষী লোকেরা ঠাসঠুস করে কথা বলে, আবেগকে অপেক্ষাকৃত কম প্রশ্রয় দেয় এবং প্রায়ই দেখা যায় অপ্রয়োজনীয় কথা কম বলে।
সব ঠিক, মিষ্টভাষীরাই গুনে ও অর্জনে এগিয়ে থাকে। থাকা হয়তো উচিতও। কিন্তু কেন জানি মনে হয় মিষ্টভাষীদের পিঠটা চওড়া বেশি, অন্তত স্পষ্টভাষীদের চেয়ে। যুক্তির খাতিরে তাহলে ধরেও নেওয়া যেতে পারে বুকটাও তাদের চওড়া বেশি।
রাত ৩টা। বেশ বৃষ্টি হচ্ছে। লাখো সেকেন্ড আগে বৃষ্টির রাতকে কিছু মনে হতো। এখন হয় না। এখন বৃষ্টি মানে কাদা। রাত যখন আরও কম ছিল, বৃষ্টি বোধহয় আরও জোরে হচ্ছিল, একজন বড়ভাই ফেসবুকে লিখেছিলেন- রাতের বৃষ্টিতে ভেজার ‘আনন্দ’ সম্ভবত সঙ্গমের থেকেও বেশি। উনি কবি। আমি না।
মিষ্টভাষী, স্পষ্টভাষী কারে যে আমি প্রিয় বলি
প্রিয় আমি যাকে খুশি বলি, জানি তাতে প্রিয় ও অপ্রিয় কোনো মাখলুকাতেরই কিছু যাবে-আসবে না; যাওয়া-আসার প্রশ্নও কোনোকালে ছিল না। তবে আপদ ছিল, আছে, থাকবে।
পছন্দ আপেক্ষিক। x-এর সাপেক্ষে y-এর মানের মতো। জীবনের সব পর্যায়ে পছন্দ এক ও অভিন্ন থাকবে- এমন ভাবাও অবান্তর। তবে জরুরি হলো সমস্ত পছন্দের ন্যূনতম যৌক্তিকতা। মিষ্টভাষী হওয়ার জন্য কয়েক হাজার সুকারণ আছে। এবং মনে রাখা জরুরি এগুলো ন্যুনতম নয় বরং সর্বোচ্চই। অন্যদিকে স্পষ্টভাষী- পৃথিবীতে মিষ্টভাষী হওয়ার যতসব কারণ রয়েছে তার থেকে অন্তত একটা কারণ কম হবে স্পষ্টভাষী হওয়ার। তবে এর কারণগুলোও মোটেও দুর্বল নয় বরং খানিকটা রাজকীয় ধাচেরই।
উপরে এই যে পরিসংখ্যানটা দিলাম- কী মনে হয়? এটা কোনো পরিসংখ্যান ব্যুরো বা বুড়ির? না জনাব, এ পরিসংখ্যান আমাকে কেউ এনে দেয়নি, হাজারটা লোককে কয়েকটা করে প্রশ্ন করে দ্বৈবচয়ন পদ্ধতিতে আমি নিজেও এ পরিসংখ্যান করিনি। এ হলো মিষ্টভাষী বনাম স্পষ্টভাষীর একটা কাল্পনিক পছন্দের তর্কাবস্থা বাস্তবায়নের প্রায়গাণিতিক উপমামাত্র।
প্রশ্ন থেকেই যায়- আরে ভাই, ভুলভাল তথ্য দেওয়ার দরকারটা কী? আরে ভাই এতো ভুল তথ্যও দেয়া হয়নি। একটু ভেবে দেখেন- মিষ্টভাষী হওয়াটা মানুষের জন্য একটা ইতিবাচক গুন, ঠিক? এবার এই গুনের পেছনে হাজারটা যুক্তি দাঁড় করিয়ে দেওয়া কি খুবই কঠিন কাজ? না, না..একেবারেই কঠিন না। টুকটাক চেষ্টাচুষ্টি করলে হয়েই যাবে মনে হয়। এখন দ্বিতীয় ধাপে সমস্যা হলো স্পষ্টভাষীর দলে একটা কারণ কম কেন? সহজ- কারণ স্পষ্টভাষী হলে মানুষ আপনাকে মিষ্টভাষীর চেয়ে কম পছন্দ করবে।
ব্যাস, তাহলে তো হয়েই গেল। মিষ্টভাষীকে প্রিয় বলবো। কিন্তু আমি বলি না। পছন্দ হয় না মিষ্টভাষী লোকগুলোকে সবসময়। বেশিরভাগ মিষ্টভাষী লোকগুলো থেকেই কেমন জানি একটা ভেজাল ভেজাল গন্ধ পাওয়া যায়। এটা আমারই দুর্বলতা, আমি জানি। আামর কাছের ও দুরের মানুষেরা এটা খুব ভাল করে জানেন, যে আমি নিজে কতটা মিষ্টভাষী। একদমই না।
'সত্য সুন্দর'- এ শব্দদুটো পরপর এতবেশি পরিচিত যে, বাংলা পড়তে জানে এমন যে-কেউ শব্দদুটি পাশাপাশি দেখলে উচ্চারণ একটু বদলে সুর করে গেয়েই ফেলবে। বহুদিন ধরে নোবেলজয়ী বিশ্বকবির এই উপলব্ধিটা আমার কাছে কেমন কেমন লাগে। একজীবনেই কী ভয়ংকর ভয়ংকর সব সত্যের মুখোমুখি হতে হয় এক-একটা মানুষকে! ওই ভয়ংকর সত্যগুলোকে আমার কোনোদিনই সুন্দর মনে হয়নি। সত্যের ভিত্তি এখানে বিবেচনায় নেইনি, সত্যকে সত্য হিসেবেই ধরে নিয়েছি।
সত্য অসুন্দর, এটা একেবারেই বলছি না। চারিত্রিক গুনাবলী নিয়ে চিন্তাটিন্তা করতে গেলে হয়তো দেখা যাবে সত্যই সবচাইতে জরুরি এলিমেন্ট। ব্যক্তি থেকে সমষ্টি, তারপর অনন্ত পর্যন্ত হলেও হতে পারে সত্যের বিস্তৃতি।
সেসব একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা আর মিষ্টভাষী বনাম স্পষ্টভাষীর মতো জরুরি তো নয়ই। কথা হলো মিষ্টভাষীকে সত্য থেকে আলাদা করে অসুন্দর করে উপস্থাপন করার অপচেষ্টা কেন করলাম?
কারণ, মিষ্টভাষী মানুষেরা মানুষকে বহুদিন পর্যন্ত কষ্ট দেয় না। অন্তত যতদিন তাদের ধৈর্যে কুলায়। আর মনে হয়, ভাষার মিষ্টতা এবং ধৈর্যের মধ্যে একটা সম্পর্ক আছেই। তা না হলে মিষ্টভাষীরা এতো এতো ধৈর্য কোথায় পায়?
মিষ্টভাষীরা মানুষকে বহুদিন কষ্ট দেয় না, মিষ্টি করে করে কথা বলে। অন্যদিকে স্পষ্টভাষী লোকেরা ঠাসঠুস করে কথা বলে, আবেগকে অপেক্ষাকৃত কম প্রশ্রয় দেয় এবং প্রায়ই দেখা যায় অপ্রয়োজনীয় কথা কম বলে।
সব ঠিক, মিষ্টভাষীরাই গুনে ও অর্জনে এগিয়ে থাকে। থাকা হয়তো উচিতও। কিন্তু কেন জানি মনে হয় মিষ্টভাষীদের পিঠটা চওড়া বেশি, অন্তত স্পষ্টভাষীদের চেয়ে। যুক্তির খাতিরে তাহলে ধরেও নেওয়া যেতে পারে বুকটাও তাদের চওড়া বেশি।
রাত ৩টা। বেশ বৃষ্টি হচ্ছে। লাখো সেকেন্ড আগে বৃষ্টির রাতকে কিছু মনে হতো। এখন হয় না। এখন বৃষ্টি মানে কাদা। রাত যখন আরও কম ছিল, বৃষ্টি বোধহয় আরও জোরে হচ্ছিল, একজন বড়ভাই ফেসবুকে লিখেছিলেন- রাতের বৃষ্টিতে ভেজার ‘আনন্দ’ সম্ভবত সঙ্গমের থেকেও বেশি। উনি কবি। আমি না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন